প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ জনশক্তি নিয়ে সমস্যা আছে বলে জানিয়েছেন । তিনি বলেন, বিভিন্ন পর্যায়ে আমরা তা সমাধানের জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি। মালয়েশিয়ায় লোক পাঠাতে যে বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে, তাও নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।
বিদেশে গিয়ে বিভিন্ন কারণে পাসপোর্ট হারিয়ে ফেললে পরে নতুন করে ইস্যু করার সময় প্রবাসীরা সঠিক তথ্য দেন না বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী। তিনি জানান, তথ্য ভুল থাকলেও ফিঙ্গার প্রিন্টে ধরা পড়ে যায়। এখন এ বিষয়ে কী করা যায় সেটা নিয়ে ভাবছি। প্রবাসীরা কিন্তু দেশের জন্য অনেক কিছু সেক্রিফাইজ করেন। আমাদের সবুজ পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মান ধরে রাখতে হবে। বুঝেশুনে আমাদের সমন্বয় করতে হবে।
মানুষকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে পাচার করা হয় বলে অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমি তো আপনার গ্রামে নেই। আপনি তো আছেন, আমি অনুরোধ জানাব এ ধরনের দালাল চক্র গরিবদের ভুলিয়ে প্রতারিত করলে সেক্ষেত্রে আপনারা আপনাদের ভূমিকা পালন করবেন। তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন। এতে প্রতারণা এমনিতেই কমে যাবে।
দালাল চক্র কমিয়ে আনতে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকেও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী। ডিসিদের কী বার্তা দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডিসিদের সচেতনতার কথা বলেছি। সচেতনতা হলো আমাদের জন্য মূল বিষয়। আর ডিসিদের অনুরোধ করেছি প্রবাসী ইস্যুতে যেন একটু নজর দেন। সবাই সহযোগিতা করলে এই খাত এগিয়ে যাবে।
প্রবাসীরা হুন্ডিতে টাকা পাঠালে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে- এ প্রশ্নে ইমরান আহমেদ বলেন, এখানে কে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আর কে লাভবান হচ্ছে- সেটা একটা ইস্যু। কেন মানুষ হুন্ডিতে টাকা পাঠায়; সেটা আপনারা ভালো বোঝেন। আমি কিছু বলতে চাই না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে- বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের চেয়ে আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স বেশি আসছে, এ বিষয়টি আপনারা কিভাবে দেখছেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন অঞ্চলের ইস্যু আলাদা। এটা কিন্তু কোনো সমস্যা না। গত বছর থেকে এ বছর এখন পর্যন্ত রেমিট্যান্সে এগিয়ে আছি বা পেছনে না। আমি টাকা হিসাবে না; ডলার হিসাবে বলছি। যেহেতু সারা বিশ্বে ফরেন কারেন্সি নিয়ে একটা সংকট চলছে, এজন্য আমরা একটু ব্যথা বেশি অনুভব করছি। আশা করছি, এটাও সমাধান হয়ে যাবে।
মালয়েশিয়া যেতে কোনো খরচ লাগে না; তারপরও আড়াই থেকে তিন লাখ করে টাকা নেওয়া হচ্ছে। এ জায়গাটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না কেন? এ প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তবে এক হাতে তালি হয় না। এখানে বাংলাদেশ, ওখানে মালয়েশিয়া আছে। অনেক সিস্টেমের ভেরিয়েশনের কারণে আপনি যে প্রশ্ন তুলেছেন, এরকম কিছু একটা আছে। আমরা এ বিষয়ে খুশি না।
‘আপনি তো বলছেন আড়াই থেকে তিন লাখ; বাস্তবে নিচ্ছে চার লাখ টাকা। আমরা সব বিষয়ে খবর রাখি। এ বিষয়টি সমাধান করার জন্য তাদের (মালয়েশিয়ার) মন্ত্রী আসছেন আগামী সপ্তাহে। দেখি কি ফলাফল বের করতে পারি। মালয়েশিয়ার বিষয়ে আরেকটা কথা বলব, অনেক সময় লোক পাঠাতে অনেক এডজাস্টমেন্ট করতে হয়।’
জনশক্তি রপ্তানিতে অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে খরচ বেশি হয়, সেটা কমিয়ে আনার বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নিয়েছেন কিনা- জানতে চাইলে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী বলেন, খরচ বেশি লাগে কেন, আমি যদি বেশি দিতে রাজি থাকি তাহলে এজেন্টরা বেশি নেবে না কেন? আপনারা সচেতন হোন তাহলে কমে যাবে। সবাই যৌথভাবে আমাদের সহযোগিতা করেন।