আর নতুন সড়ক নির্মাণ করা হবে না নির্বাচনের আগে। পুরনো সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে অগ্রাধিকার দিতে হবে। জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সম্মেলনে এ নির্দেশনা দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে চিহ্নিত নসিমন, করিমনের মতো অবৈধ গাড়ি বন্ধে অতীতে কঠোর হলেও ভোটের বছরে মন্ত্রী ডিসিদের পরামর্শ দিয়েছেন, তিন চাকার যানবাহনে নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে তা যেন গরিব মানুষের জীবিকা অর্জনে বাধা না হয়।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আজ বুধবার ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে মন্ত্রণালয় ভিত্তিক অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব নির্দেশনা দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। পরে ব্রিফিংয়ে তা তিনি সাংবাদিকদের জানান। অধিবেশনে বিশেষ অতিথি ছিলেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহেমদ। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে অধিবেশনে সংশ্নিষ্ট সচিবরা ছিলেন।
ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডিসি সাহেবদের গুরুত্ব দিয়ে বলেছি, এখন আর নতুন রাস্তা করতে চাই না। বিদ্যমান রাস্তাগুলো আগামী নির্বাচনের আগে মেরামত করতে চাই। ব্যবহার যোগ্য করতে চাই। যেগুলো আছে সেগুলো মেরামত, সংরক্ষণ করা প্রথম ও প্রধান কাজ।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘অনেক উন্নয়ন হয়েছে। এবার শৃঙ্খলায় নজর দিতে ডিসিদের বলা হয়েছে। শৃঙ্খলা না এলে সাফল্য ধরে রাখতে পারব না। নির্বাচনের বছরে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে ডিসিদের নির্দেশ দিয়েছেন কিনা- প্রশ্নে তিনি বলেছেন,’শৃঙ্খলা বলতে সবকিছুকেই বোঝায়।’
বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন, মহাসড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ ইজিবাইক, ব্যাটারিকশা। ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘শহরে এবং মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি করে এসব গাড়ি। একটি ইজিবাইক দুর্ঘটনায় ১০/১২ জন মারা যায়। বড় দুর্ঘটনাতেও এত মৃত্যু হয় না। ফলে দুর্ঘটনা কমলেও মৃত্যুর হার বেড়ে গেছে। মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, নসিমন করিমন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’
তবে অননুমোদিত যানবাহনের বিষয়ে অতীতের তুলনায় নমনীয় সুর শোনা গেছে ওবায়দুল কাদেরের কণ্ঠে। তিনি বলেছেন, ‘এসব বাহনের বিষয়ে নীতিমালা করতে সড়ক পরিবহন সচিবকে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। গরীব মানুষের জীবন যেমন আছে, জীবিকাও আহরণ করতে হবে। তাদের জীবিকা চাকাটা বন্ধ করে দিতে পারি না। এগুলোকে নীতিমালার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নীতিমালা করতে হবে।’
মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও তিন চাকার যান চলাচল প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘মোটরসাইকেল ঢাকা শহরে ৯৫ শতাংশই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কিন্তু মফস্বলে তিনজন নিয়ে, হেলমেট ছাড়া চলছে মোটরসাইকেল। এ বিষয়ে নজর দিতে ডিসিদের বলা হয়েছে।’
নুরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন, রেলের অব্যহূত জমি কৃষি কাজের আওতায় আনতে ডিসিদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। দেশের সব জেলায় রেল সংযোগের আওতায় আসবে। রেলের প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণে ধীরগতি কাটাতে ডিসিদের নির্দেশনা দেন রেলমন্ত্রী।