মালয়েশিয়ার ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’ ইবিট লিও টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেন। বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশ নিতে ঢাকায় আসেন সমাজকর্মী ওস্তাদ ইবিট লিও। গত বছরও তিনি টঙ্গীতে দ্বিতীয় পর্বের বিশ^ ইজতেমায় অংশ নিয়ে ছিলন।
বিশ^ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের মিডিয়া সমন্বয়ক মোহাম্মদ সায়েম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে সরাসরি টঙ্গী ইজতেমার ময়দানে নিয়ে আসা হয় তাকে।
আলোচিত দাঈ ইবিট লিও একজন মালয়েশিয়ান চাইনিজ মুসলিম। তিনি মালয়েশিয়ার মুসলিম উদ্যোক্তা এবং ধর্ম প্রচারক হিসেবে সব মহলে ইবিট লিও নামে পরিচিত। তার পুরো নাম-ইবিট ইরাওয়ান বিন ইব্রাহিম লিও।
১৯৮৪ সালের ২১ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ার পাহাং রাজ্যে তিনি জন্মগ্রহণ করেছেন। তার পিতার নাম মুয়াডজম শাহে লিউ ইউ পাউ। ১১ জন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। দ্বীনকে অনুসরণ করে ১২ বছর বয়সে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন।
সুদর্শন সুন্নতি দাঁড়ি, ক্যাপ এবং কুর্তায় জনপ্রিয় এই ওস্তাদ ইবিট লিও তার পারিবারিক অনুপ্রেরণায় মানবকল্যাণ ও ইসলামী দাওয়াতের কাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।
এ পর্বের আয়োজক কমিটির সদস্য ডা. মো. রফিকুল ইসলাম জানান, একজন সমাজসেবক ও ধর্ম প্রচারক সৎ, ন্যায়-নীতিবান, উদার সমাজ সংস্কারক মালয়েশিয়ায় সর্বপরিচিত। দেশটির সুশীল সমাজ, তরুণ-নবীন, যুব-প্রবীণ সমাজে তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে।
ইবিট লিও ২০১৫ সালে ‘মওলিদুর রসুল’ জাতীয় পুরস্কার এবং ২০২০ সালের ১৫ আগস্ট জাতীয় যুব দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে সমাজ বিনির্মাণে এবং মহামারি করোনার সময়ে মানবকল্যাণে বিশেষ অবদান রাখায় জাতীয় যুব দিবসের বিশেষ সম্মানে ভূষিত করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন।
এছাড়াও মানবকল্যাণে অবদান রাখায় সরকার বিভিন্ন সময় তিনি একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন। ইবিট লিও ডা. হাজী মোহাম্মদ ফাদজিল্লাহ কামসাহ এবং অধ্যাপক হানিম তাহিরের পরিচালনায় এক্সেল প্রশিক্ষণের মোটিভেশনাল স্পিকার। তিনি সবার প্রেরণাদানকারী, ইসলাম আগামা, ইসলাম ইতু ইন্দাহ, উসরাহ নূরানী, এবং আইকেআইএম এবং সিনার রেডিওর নিয়মিত বক্তা।
গত বছর বাংলাদেশে ইজতেমায় যোগ দিতে এসে খোলা রিকশায় ঘুরে বেড়ানোর একটি ছবি তার ভেরিফাইড ফেসবুকে পোস্ট করেন ইবিট লিও। সেখানে তিনি লিখেন, অষযধসফঁষরষষধয. ও খড়াব ইধহমষধফবংয. আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি’। গত বছরও তিনি টঙ্গীতে ইজতেমায় যোগ দেন। ইজতেমার শুরুর একদিন আগে ইজতেমার মুরুবব্বীদের অনুমতি নিয়ে ওই বছর টঙ্গী রেলস্টেশন এলাকার অসহায় সাধারণ মানুষ ও ছিন্নমুল শিশুদের মধ্যে খিছুরী বিতরণ করেছিলেন। এ কাজে জামাত থেকে তাকে কয়েকজন রাহাবার দেয়া হয়। তাদের নিয়েই তিনি খাবার বিতরণ করেন। ইজতেমা শেষ হলে তিনি বাংলাদেশে বেশ কিছুদিন থাকবেন। ধর্মীয় কাজসহ মানবিক বিভিন্ন কাজ করবেন। এ সময় তাকে জামাতের সাথী ভাইয়েরা সহযোগিতা করবেন।
ইবিট লিও ফেসবুক পোস্টে আরও বলেন, এখানকার জীবন আশ্চর্যজনক যা থেকে আমি অনেক কিছু শিখতে পারছি। এখানে নানান প্রকৃতির মানুষ আছে এবং তারা সবাই খুব বন্ধুসুলভ।’