মাসখানেক আগে গাজার যেসব এলাকা থেকে ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহার করা হয়েছিল, সেসব এলাকায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস আবার ফিরে এসেছে। এমনকি তারা ওইসব এলাকায় তাদের নিজস্ব প্রশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য পুলিশ অফিসার নিয়োগ এবং বেসামরিক কর্মীদের আংশিক বেতন প্রদানও শুরু করেছে। গাজা সিটির স্থানীয় চার অধিবাসী এবং হামাসের এক সিনিয়র কর্মকর্তা শনিবার এই তথ্য জানিয়েছেন।
এসব এলাকায় ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল ইসরাইলি বাহিনী। তারা ওইসব এলাকায় হামাসকে নির্মূল করার দাবিও করেছিল। কিন্তু তারা হামাসের শক্তি বুঝতে পারেনি। হামাসের যে ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা রয়েছে, তা অনুধাবন করতে পারেনি। তবে হামাস ফিরে আসতেই ইসরাইলি বাহিনীও ওইসব এলাকায় আবার হামলা করতে শুরু করেছে।
গাজা সিটির চার অধিবাসী বার্তা সংস্থা এপিকে জানিয়েছেন, গাজা সিটির পুলিশ সদরদফতর এবং অন্যান্য সরকারি অফিসে ইউনিফর্ম পরা এবং সাদা পোশাকের পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়োগ করেছে হামাস। তারা জানিয়েছে, তারা বেসামরিক কর্মীদের ফিরতে দেখেছেন। তবে এরপর ইসরাইলি হামলাও প্রত্যক্ষ করেছেন।
পুলিশের ফিরে আসাটা বিধ্বস্ত এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা প্রয়াসের অংশবিশেষ বলে মনে হচ্ছে। হামাসের এক কর্মকর্তাও এপিকে একই কথা বলেন। তিনি অবশ্য তার পরিচয় প্রকাশ করেননি। কারণ তিনি কথা বলার অনুমতিপ্রাপ্ত নয়।
হামাসের ওই কর্মকর্তা বলেন, যেসব এলাকা থেকে ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যহার করা হয়েছে, সেসব এলাকায় তাদের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দিয়েছেন। পরিত্যক্ত দোকানপাট ও বাড়িঘরে যাতে লুটপাট বা চুরি না হয়, সেটা প্রতিরোধের চেষ্টা তারা করছেন। এসব সম্পত্তির মালিকরা ইসরাইলের উচ্ছেদ নোটিশের পর সরে গিয়েছিলেন।
হামাস প্রায় ১৭ বছর আগে গাজায় তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। তারা নিজস্ব সরকারি আমলাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে হাজার হাজার বেসামরিক কর্মী নিয়োগ করে। এদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষক, ট্রাফিক পুলিশ, সিভিল পুলিশ।
বর্তমানে এসব কর্মীকে আংশিক বেতন হিসেবে ২০০ ডলার করে দেয়া হয়। এতে বোঝা যাচ্ছে যে হামাসের শক্তি এখনো অটুট আছে। উল্লেখ্য, ইসরাইল দাবি করেছে যে তারা গাজায় হামাসের প্রায় ১০ হাজার যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। আর ৭ অক্টোবর ইসরাইলি হামলা চালানো সময় হত্যা করা হয়েছিল ১০০০ হামাস যোদ্ধাকে। কিন্তু মনে হচ্ছে, ইসরাইলের দাবি সত্য নয়।
ইসরাইলি কমান্ডাররা দাবি করছে যে হামাসের ব্যাটালিয়ন কাঠামো গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু কার্যত দেখা যাচ্ছে যে হামাস এখনো গেরিলা কায়দায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
সূত্র : টাইমস অব ইসরাইল