দৈনিক বাংলাবন্ধু

১৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ৩০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ১২ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

দৈনিক বাংলাবন্ধু

বিজ্ঞাপনের জন্য বরাদ্ধ

শিরোনামঃ

ইয়াবাসহ দুইজন গ্রেপ্তার অক্সিজেন ও বালুছড়া থেকে || অল্পের জন্য রক্ষা পেল এয়ার এরাবিয়ার ১৯৮ যাত্রী চট্টগ্রাম বিমান বন্দরে || পাইলটের মৃত্যু প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত,কর্ণফুলীতে || ভারত তিস্তা প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী || ধর্ষণ বিয়ের প্রলোভনে, ৯ বছর পলাতক থাকার পর মীরসরাইয়ে ধরা || ডেভিড মিল নতুন রাষ্ট্রদূত হচ্ছেন চলে যাচ্ছেন পিটার হাস || ড. ইউনূসকে আপিল করতে হবে ৫০ কোটি টাকা জমা দিয়ে || পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ল ভারতে কৃষকদের দিল্লি চল যাত্রায় || ১৪৪ ধারা ভাঙবে ১০ জন মিছিল করে || সংশয় ভয় দেখিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে || একুশে পদক পাচ্ছেন ২১ বিশিষ্ট ব্যক্তি || ইসরাইলি হামলায় নিহত ২৮,৪৭৩ গাজায় || আজ ভালোবাসার দিন ,আজ বসন্ত || ‘পুড়িও না, পড়’ কর্মসূচিতে কুরআন বিতরণ নেদারল্যান্ডসে || গণতন্ত্র উপভোগ করছে এখন,দেশের মানুষ : প্রধানমন্ত্রী || প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ, জারদারি রাষ্ট্রপতি পাকিস্তানের || জামিন শুনানি আজ ফখরুল-আমীর খসরুর || মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ড. ইউনূসের বিচার নিয়ে যে আহবান জানাল || স্বর্ণখনিতে ধস নিহত ৫৪ ফিলিপাইনে || ভালোবাসা দিবসের টেলিফিল্ম -একগুচ্ছ নাটক ||
জাতীয়

ফাঁসি একই মঞ্চে দুই আসামির

অধ্যাপক ড. তাহের হত্যা মামলায় দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের  । এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কারা কর্তৃপক্ষ। রাজশাহী কারাগারে একসঙ্গে দু’জনেরই ফাঁসি কার্যকর ।

কারা সূত্র মতে, গত মঙ্গলবার দুই আসামির পরিবারের সদস্যরা তাদের সঙ্গে শেষ সাক্ষাৎ করেন। এর মাধ্যমে দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর করার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে আটজন জল্লাদকে। কয়েক দফায় তারা ফাঁসি কার্যকর করার মহড়া দিয়েছে।

বুধবার ফাঁসির আসামি জাহাঙ্গীর আলমের ছোট ভাই মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘কারা কর্তৃপক্ষ আমাদের চিঠি দিয়ে আসামিদের সঙ্গে শেষ দেখা করতে ডেকেছিলেন। এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুরে আমাদের পরিবারের ৩৫ জন সদস্য জাহাঙ্গীরের সঙ্গে শেষ দেখা করেছে। এর আগে সকালে ড. মিয়া মহিউদ্দিনের পরিবারের সদস্যরা শেষবারের মতো দেখা করেছেন বলে শুনেছি।

জানা গেছে, অধ্যাপক ড. তাহের হত্যা মামলার দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি, ডিআইজি প্রিজন ও কারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বৈঠক করেছে। তবে এ নিয়ে কোনো বক্তব্য দেয়নি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ। অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করে ফাঁসির প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করছে তারা।

প্রস্তুত ৮ জল্লাদ

ফাঁসি কার্যকরের বিষয়ে দিনক্ষণ ঠিক করে জানায়নি কারা কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে। তবে কারাগারের একটি সূত্র জানিয়েছে, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে আজকালের মধ্যেই ফাঁসি কার্যকর করা হতে পারে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির। একই দিনে দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর করতে চায় কারা কর্তৃপক্ষ। আইন ও বিধি অনুযায়ী সুবিধামতো সিদ্ধান্ত নিতে চান সংশ্লিষ্টরা।

একজন আসামির ফাঁসি কার্যকর করতে চারজন জল্লাদের প্রয়োজন হয়। এদের মধ্যে একজন প্রধান জল্লাদের দায়িত্ব পালন করেন। বাকি তিনজন তাকে সহযোগিতা করেন। তাই মিয়া মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের জন্য আটজন জল্লাদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা মহড়াও করেছেন। এই আট জল্লাদের তালিকায় আছেন- ইসলাম, আলম ও ওয়াহাব। বাকিদের নাম জানা যায়নি। জল্লাদরা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।

কঠোর গোপনীয়তা

ড. মিয়া মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের ফাঁসির প্রক্রিয়া নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে কারা কর্তৃপক্ষ। পরিবারের সদস্যরা দেখা করতে গেলে কারা ফটকে ভিড় জমান সংবাদমাধ্যম কর্মীরা। কিন্তু রাজশাহী বিভাগের ডিআইজি প্রিজন কামাল হোসেন, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আবদুল জলিল, জেলার নিজাম উদ্দিন এড়িয়ে গেছেন সাংবাদিকদের। ফাঁসির প্রক্রিয়া বা দিনক্ষণ নিয়ে কথা বলেননি রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ ও সিভিল সার্জন আবু সাঈদ মো. ফারুকও। রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল একটি সভায় আছেন জানিয়ে মুঠোফোনে বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। আপাতত কিছু জানাতে পারছি না।’ রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. আবু সাঈদ মো. ফারুক বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।’

২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হন অধ্যাপক তাহের আহমেদ। পরদিন ২ ফেব্রুয়ারি বাসাটির পেছনের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় অধ্যাপক এস তাহের আহমেদের গলিত মরদেহ। ৩ ফেব্রুয়ারি তার ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ অধ্যাপক তাহেরের সহকর্মী সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী ও স্থানীয় জাহাঙ্গীর আলমসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করে।

২০০৭ সালের ১৭ মার্চ ছয় জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। এ হত্যা মামলায় ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দু’জনকে খালাস দেন। দণ্ডিতরা হলেন- বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, অধ্যাপক ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলম, তার ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের স্ত্রীর ভাই আব্দুস সালাম। তবে বিচারে খালাস পান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী ও জাহাঙ্গীরের বাবা আজিমুদ্দিন মুন্সি।

পরবর্তী দণ্ডপ্রাপ্তরা উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আপিল বিভাগ মিয়া মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের রায় বহাল রাখলেও আসামি নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের স্ত্রীর ভাই আব্দুস সালামের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করেন। তবে আপিলে সাজা কমে যাবজ্জীবন হওয়া দুই আসামির দণ্ড বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের রায়ই বহাল রাখেন।

LEAVE A RESPONSE

Your email address will not be published. Required fields are marked *